নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ২৭ জানুয়ারী ২০২৪ ১০ : ২৮

বিধবাদের চরিত্র এর আগেও করেছেন। সুন্দরবনের ‘বাঘ বিধবা’ চরিত্রে এই প্রথম। ২৯তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রযোজক রানা সরকারের ‘বনবিবি’ প্রথম দেখানো হয়। দর্শক প্রশংসিত সেই ছবি। ১ মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ছবিটি। তার আগে শুক্রবার বইমেলা প্রাঙ্গনে "বাংলা পক্ষ"র স্টলে মুক্তি পেল ছবির টিজার। উপস্থিত ছবির নায়িকা পার্নো মিত্র, পরিচালক রাজদীপ ঘোষ, মিশকা হালিম, রণজয় বিষ্ণু, আর্য দাশগুপ্ত, সঙ্গীত পরিচালক সপ্তক সানাই দাস, দীপান্বিতা এবং প্রযোজক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন "বাংলা পক্ষ"র কর্ণধার গর্গ চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই বিধবাদের জীবন প্রসঙ্গে পার্নো আজকাল ডট ইনকে বলেন, ‘‘বাবার মৃত্যুর সময় আমার মা খুবই অসুস্থ। আত্মীয়রা মাকে আমিষ খেতে নিষেধ করেছিলেন।’’



ছবির মুখ্য আকর্ষণ পার্নো মিত্র, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য। রাজদীপ ঘোষের পরিচালনায় সুন্দরবনের বিধবা পল্লী, তাঁদের প্রেম-অপ্রেম, জীবনযাত্রা—ছবির বিষয়। পাশাপাশি উঠে এসেছে সেখানকার অন্ধকার দিকও। পরিচালকের আশা, ‘বনবিবি’ উৎসবে জায়গা করে নেওয়ায় ছবিটিকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ বাড়বে। একুশ শতকেও কি বিধবাদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি একটুও বদলায়নি? অভিনয় করতে গিয়ে কী বুঝলেন পর্দার ‘বাঘ বিধবা’ পার্নো? প্রশ্ন রাখতেই নায়িকার দাবি, ‘‘শুধু সুন্দরবন বলে নয়, কোথাও কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। ওই এলাকায় কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, সুন্দরবনের ‘বাঘ বিধবা’র জীবন ভয়ঙ্কর। নিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়ে তাঁরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন না।’’ একটু থেমে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বলেন, ‘‘আমার মাকে সেদিন আমি জোর করে আমিষ না খাওয়ালে মা মরেই যেত। কারণ, মায়ের শরীরে প্রোটিনের অভাব দেখা দিয়েছিল। আত্মীয়দের বড় অংশ সেদিন সমালোচনা করেছিলেন। কান দিইনি।’’

বরাবর অন্য ধারার গল্প পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে ভালবাসেন রানা। সেই জায়গা থেকেই তাঁর ‘বনবিবি’ তৈরির ইচ্ছে। এদিকে টলিউড বলছে, কুণাল ঘোষের লেখা ‘বাঘ বিধবা’ নাকি তাঁর ছবির অনুপ্রেরণা? এই তথ্য ভুল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজদীপ এর আগেও সুন্দরবনে শুট করেছে। খুব কাছে থেকে আঞ্চলিক বাসিন্দাদের দেখেছে। ওর আগ্রহেই এই ছবি।’’ ইদানীং ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’ কথাটা ভাইরাল। সেই জায়গা থেকেই কি বইমেলায়, বাংলা পক্ষ স্টলে ছবির টিজারমুক্তি? রানার দাবি, ‘‘একমাত্র এই সংগঠন বাংলা ছবির সমর্থনে কথা বলছে। তাছাড়া, নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে নিয়ে টিজারমুক্তি হলে সীমাবদ্ধ প্রচার হবে। বইমেলায় সেই প্রচার অনেক বেশি হল।’’



ছবি যে ধারারই হোক, দিনের শেষে ভাল ব্যবসা আসল কথা। ‘বনবিবি’ কি সেই জায়গা পূরণ করতে পারবে? এ বিষয়ে নায়িকা-প্রযোজকের এক সুর। নায়িকার মতে, যেহেতু কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রশংসিত তাই আশা করছেন ভালই ফল করবে। রানার কথায়, ‘‘আমরা টিকিটের দাম কম রাখছি। আশা, দর্শক টানতে সেটা সাহায্য করবে। যদিও আমাদের ব্যবসা তাতে কম হবে। তবু ছবির স্বার্থে খুশি মনেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ যুক্তি, শাহরুখ খান-সলমন খানের ছবি দেখতে দর্শক হাজার টাকার টিকিট কাটতেও পিছপা হয় না। যাবতীয় সমস্যা বাংলা ছবির ক্ষেত্রে।